Friday, March 13, 2020

হাঁস মুরগীর কয়েকটি সাধারন রোগের লক্ষন ও কারন, চিকিৎসা ও প্রতিরোধ



যাদের ইতোমধ্যে হাঁস মুরগীর খামার আছে এবং যারা নতুন করে খামার করতে চাচ্ছি, একটা ব্যাপার সবার কাছে খুব সাধারন উদ্বেগের বিষয় যে হাঁস মুরগীর রোগ বালাই হলে কি করব? কখনো কখনো মড়ক লেগ হঠাৎ একসাথে হাজার হাজার হাঁস মুরগী মারা যায়। এর মাঝে বেশ কিছু প্লেগ বা মড়ক জাতীয় রোগ আছে যার এখন তেমন কোন চিকিৎসা আবিষ্কার হয়নি; বার্ড ফ্লু তন্মধ্যে অন্যতম। নিচে আমরা হাঁস মুরগীর কয়েকটি সাধারন রোগ বালাই তার লক্ষন ও কারন, চিকিৎসা ও প্রতিরোধ নিয়ে আলোচনা করব।

Duck Plague – ডাক প্লেগ

লক্ষন ঃ-
1. হাঁসের চোখ দিয়ে পানি ঝরে।
2. চাল ধোয়া পানির মত ঘোলা পায়খানা করে।
3. মাঝে মাঝে নিলাভ, মাঝে মাঝে সবুজ পায়খানা করে।
4. পা অবশ হয়ে যায় এবং এক জায়গায় চুপচাপ বসে থাকবে, ঝিমাবে।
5. পুরুষ হাঁসের ক্ষেত্রে পুরুষাঙ্গ বের হয়ে যায়।
6. প্রতিদিন ২/৪টা মারা যাবে।
7. মৃত্যু হার ৮০-৯০ ভাগ।
চিকিৎসা ঃ-
1. কসুমিক্স প্লাস – ১লিঃ পানিতে ২গ্রাম মিশিয়ে বার বার খাওয়াতে হবে ৫দিন।
2. সাথে স্যালাইন – ইলেক্ট্রোলাইট / ডেক্সট্রোলাইট
3. একই সাথে ৫-১০গ্রাম মিশিয়ে খাওয়াতে হবে।
4. পটাশ দিয়ে বার বার হাঁসের ঘর ধুয়ে দিতে হবে।
প্রতিরোধ ঃ-

ডাক প্লেগের ভ্যাকসিন দিতে হবে।
ডাক কলেরা
কারন ঃ-

ব্যক্টেরিয়া জনিত
লক্ষনঃ-
1. তরল পায়খানা হবে।
2. ঘনঘন পায়খানা হবে।
3. মৃত্যু হার ৮০-৯০ ভাগ।

প্রতিরোধ ঃ- ডাক কলেরার ভ্যাকসিন দিতে হবে।
মুরগীর রানীক্ষেত
কারন ঃ-

ভাইরাস জনিত রোগ।
লক্ষন ঃ-
1. সবুজ পায়খানা করে।
2. তাপমাত্রা বেড়ে যাবে।
3. চুনা পায়খানা করে।
4. মাঝে মাঝে নিল পায়খানা করে।
5. মাথার ঝুটি ফ্যাকাসে হয়।
6. পাখনা ঝুলে যায়।
7. পালক উস্কো খুস্কো হয়ে যায়।
8. তিব্র আকারে আক্রান্ত হলে লাফ দিয়ে পড়ে মারা যায়।
9. আক্রান্ত মুরগির লিভারে সাদা সাদা দাগ পড়বে।
10. মুরগির স্প্লিন এর উপর সাদা রিঙের মত দাগ পড়বে।
চিকিৎসা ঃ-
1. রানিখেত বা ভাইরাস জনিত রোগের কোন সুনির্দিষ্ট চিকিৎসা নাই।
2. পরবর্তিতে যেন নতুন ভাবে অন্য কোন ব্যক্টেরিয়ায় আক্রান্ত না হয় তার জন্য এন্টিবায়োটিক প্রয়োগ করতে হবে। যেমন: রেনামাইসিন, টেরামাইসিন ইত্যাদি।
প্রতিরোধ ঃ-

BCRDV and RDV vaccine দিতে হবে।
গাম্বুরু – Bursal Disease
কারন ঃ- ভাইরাস জনিত রোগ।
লক্ষন ঃ-
1. চুপচাপ বসে ঝিমায়, সব একসাথে বসে থাকবে।
2. পিছনের অংশে বার্সার চারপাশে পানি জমে ফোলা ফোলা থাকবে।
3. বার্সা পচে যায়।
4. মরার পর কাটলে পিছনের অংশ দিয়ে পানি বের হবে।
চিকিৎসা ঃ-
1. সুনির্দিষ্ট কোন চিকিৎসা নাই।
2. তবে আখের গুড়ের শরবত খুবই কার্যকরি। ১লিঃ পানে ২৫০গ্রাম আখের গুড়, ২টি রেনামাইসিন ট্যবলেট, ১টি লেবু মিশিয়ে খাওয়াতে হবে।
3. মুরগিকে অনবরত দৌড়াতে হবে।
4. সম্পুর্ন লিটার পালটে দিতে হবে।
প্রতিরোধ ঃ-

গাম্বুরু ভ্যাকসিন দিতে হবে।

ফাউল পক্স – Fowl Pox
কারন ঃ-

ভাইরাস জনিত
লক্ষন ঃ-

পালকের নিচে, নাকে, ঝুটিতে গুটি গুটি উঠে।
চিকিৎসা ঃ-
1. পটাশ মিশ্রিত পানিতে দিয়ে ধুয়ে দিতে হবে।
2. এনড্রোসিন, / রেনামাইসিন / টেরামাইসিন ১লিঃ পানিতে ৫মিলি ৫-৭ দিন
3. অথবা কুসুমিক্স প্লাস ৫গ্রাম ১লিঃ পানিতে।
প্রতিরোধ ঃ-

ওয়েব উইং পদ্ধতিতে ফাউল পক্স টিকা দিতে হবে।
রক্ত আমাশয়
কারন ঃ-

Plasmodium এর কারনে।
লক্ষন ঃ-
1. রক্ত মিশ্রিত পায়খানা করবে।
2. খাওয়া বন্ধ করে দিবে।
3. মলদার ভিজা থাকবে।
4. মুরগি শুকিয়ে যাবে।
5. পাখনা ঝুলে যাবে।
চিকিৎসা ঃ-

ESB / Embazin / Coccidure / Coccicure
প্রতিরোধ ঃ-

Coccdustade / Coccicubuinder খাবারের সাথে দিতে হবে।

No comments:

Post a Comment