Ctg Agro Project একটি আদর্শ দেশি মুরগির ফার্ম। এখানে ১০০% পিওর দেশি মুরগির বাচ্চা, রেডি দেশি মুরগি, ডিম পাওয়া যায়৷ Mobile: 01818452002
Tuesday, April 14, 2020
ফার্মের জৈব নিরাপত্তা।।Bio security of farm
Bio security বা জৈব নিরাপত্তা কি?
Bio অর্থ জীব বা জীবন আর security অর্থ নিরাপত্তা।
অর্থাৎ খামার স্থাপনের পরিকল্পনা হতে শুরু করে খামার পরিচালনা, উৎপাদন, উৎপাদিত পণ্যের বাজারজাত করণ এমনকি ভোক্তার কাছে উৎপাদিত পণ্য পৌছে দেয়া পর্যন্ত প্রক্রিয়াগুলোর আধুনিক বিজ্ঞানসম্মত ব্যবস্থাপনাই Bio security জৈব নিরাপত্তা।
সঠিক অর্থে রোগ জীবানু ও অন্যান্য ক্ষতিকর উপাদানের প্রভাব হতে খামার রক্ষাই জীব নিরাপত্তা ব্যবস্থা।
জীব নিরাপত্তা হচ্ছে এমন কিছু ব্যবস্থাপনার সমন্বয় যা যথাযথ ভাবে নিশ্চিত করা এজন্য জরুরী, যাতেকরে জীবানু বাহির হতে খামারে প্রবেশ করতে না পারে এবং একইভাবে খামার হতে জীবানু বাহিরে ছড়িয়ে পরতে না পারে।
Bio security এর প্রয়োজনীয়তাঃ
রোগ প্রতিরোধের সবচাইতে সহজ ও কার্যকরী উপায় হচ্ছে জীব নিরাপত্তা। জীব নিরাপত্তা খামারে রোগ জীবানু প্রবেশ নিয়ন্ত্রণ করে।
জীব নিরাপত্তা রোগের ঝুঁকি কমায়, চিকিৎসা, ঔষধ, ধকল এবং ডাক্তার খরচ কমিয়ে উৎপাদন বৃদ্ধিতে সহায়তা করে। সর্বোপরি খামারকে লাভজনক দিকে নিয়ে যেতে জৈব নিরাপত্তার বিকল্প নাই।
Bio security এর উদ্দেশ্যঃ
ব্যাকটেরিয়া এবং ভাইরাস রোগের কবল হতে খামার রক্ষা করে। এছাড়া মানুষ বা অন্যান্য জীবজন্তুর মাধ্যমে ছড়ায় এমন রোগ ও জীবানু হতে খামার রক্ষা করা, এন্টিবায়োটিকের ব্যবহার রোধ ইত্যাদি।
Bio security কিভাবে নিশ্চিত করবো ?
১। ফেঞ্চিং করতে হবেঃ খামার এলাকার চারিদিকে তারের জাল অথবা ইটের তৈরি দেওয়াল দ্বারা ফেঞ্চিং বা বেড়া দিয়ে দিতে হবে। যাতেকরে খামারের পশুপাখি বাহিরে যেতে না পারে এবং বাহিরের পশু-পাখি বা বণ্য প্রাণী খামার এলকায় প্রবেশ করতে না পারে।
২। হাত ধোয়াঃ খামারের কর্মচারী কিংবা ভিজিটর আসলে তাদের হাত দোয়ার জন্য জীবানুনাশক স্প্রে ব্যবহার করেতে হবে।
৩। ফুটবাথঃ খামারের কর্মচারী এবং ভিজিটরদের জন্য দুই জায়গায় ফুটবাথ বা পা ধোয়ার জায়গা রাখতে হবে।
ক.মুল ফটকঃ শেডের মুল গেটে ফুটবাথের ব্যবস্থা করতে হবে যাতেকরে খামারের খাদ্য বা মালামাল পরিবহনের গাড়ী ভেতরে প্রবেশের সময় চাকা এবং ভিজিটরদের পা জীবানুনাশক মিশ্রিত পানিতে ভিজিয়ে যেতে হয়ে।
খ.শেডের গেটঃ প্রতিটি শেডের গেটে ফুটবাথ তৈরি করতে হবে যাতেকরে খামার কর্মী কাজের জন্য শেডে প্রবেশের পূর্বে পা ধুয়ে প্রবেশ করতে বাধ্য হয়।
৪। আলাদা জুতা ও ইউনিফর্মঃ খামার কর্মীদের জন্য আলাদা জুতা এবং ইউনিফর্মের ব্যবস্থা করতে হবে।
৫। ভিজিটরের কাপড়, শরীর, পা ও গাড়ী স্প্রেঃ খামারে ভিজিটর বা দর্শনার্থী প্রবেশ নিষিদ্ধ করতে হবে। যদি কোন কারনে কাউকে প্রবেশ করাতেই হয়, তাহলে অবশ্যই ভিজিটরের কাপড়, শরীর, পা ও গাড়ী জীবানুনাশক দিয়ে স্প্রে করে নিতে হবে। প্রয়োজনে গোসল করিয়ে খামারের নির্ধারিত ইউনিফর্ম পরিয়ে প্রবেশ করাতে হবে।
৬। আলাদা শেড হলে কর্মচারী আলাদা রাখাঃ কারো একাধিক খামার থাকলে অবশ্যই আলাদা শেডের জন্য আলাদা কর্মচারী রাখতে হবে। যাতেকরে এক শেডের রোগ জীবানু অন্য শেডে প্রবেশ করতে না পারে।
৭। খাদ্য, পানির পাত্র ও অন্যান্য জিনিস আলাদা আলাদা শেডের জন্য আলাদা রাখাঃ প্রতিটি শেডের ব্যবহারের জিনিস আলাদা রাখতে হবে। এগুলো হচ্ছে বিভিন্ন রোগের বসবাসের স্থান। এক শেড হতে অন্য শেডে নিলে এগুলোর সাথে রোগ জীবানুও অন্য শেডে চলে আসবে।
৮। মৃত পাখি দূরে গর্ত করে পুঁতে রাখতে হবেঃ কোন কারনে খামারের কোন পাখি মারা গেলে দূরে গর্ত করে মাটিতে পুতে রাখতে হবে। কোন অবস্থাতেই মৃত পাখি বা পশু খোলা স্থানে ফেলে রাখা যাবেনা।
৯। খামারের বাহিরাংশে দিনে ০১-০২বার জীবানুনাশক স্প্রে করতে হবে।
১০। দিনে অন্তত ০১ বার মুরগি সরিয়ে দিয়ে তুষ বা মাচার উপর স্প্রে করতে হবে।
১১। প্রতিদিন অন্তত ০২-০৩বেলা ফার্ম ভিজিট করে অসুস্থ মুরগি আলাদা করাঃ খামারের মালিক অথবা ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে থাকা ব্যক্তিকে অবশ্যই প্রতিদিনি ০২-০৩বেলা খামার পরিদর্শন করতে হবে এবং কোন পাখি বা প্রানী অসুস্থ হলে দ্রুত আলাদা করে চিকিৎসা সেবা দিতে হবে। এছাড়া দূর্বল পাখি গুলোকেও আলাদা করে ফেলতে হবে।
১২। সঠিক বয়সে সঠিক ভ্যাক্সিনেশন করাঃ খামারের প্রাণী গুলোকে সঠিক বয়সে সঠিক ভাক্সিনেশন বা টিকা সঠিক নিয়মে দিতে হবে।
১৩। ইঁদুর বা মাছি দূর করতে হবেঃ খামার হতে ইঁদুর এবং মাছি তাড়াতে হবে। এগুলো বিভিন্ন রোগের বাহক হিসাবে কাজ করে।
১৪। একই শেডে বিভিন্ন প্রজাতি ও বয়সের পাখি বা প্রানী রাখা যাবেনাঃ আমাদের দেশের এটা কমন ঘটনা একই শেডে বিভিন্ন বয়সের এবং বিভিন্ন প্রজাতির পাখি রাখা। যা জীব নিরাপত্তার জন্য ভয়াবহ হুমকি।
১৫। বাহিরের পশু পাখি যেন না আসতে পারেঃ বাহিরের পশু পাখি যেন খামার এলাকায় প্রবেশ করতে না পারে সেদিকে সতর্ক দৃষ্টি রাখতে হবে।
১৬। ব্যবসায়ী বা টিকাদান কর্মী আসতে দেওয়া যাবেনাঃ খামারে মুরগি বা পশু ব্যবসায়ী এবং টিকাদান কর্মীদের প্রবেশ করতে দেওয়া যাবেনা। এধরনের লোক বিভিন্ন ফার্মে ও বাজারে ঘুরাঘুরি করে ফলে এদের মাধ্যমে খুব সহজেই এক খামারের রোগ আরেক খামারে প্রবেশ করতে পারে।
১৭। ভেটনারী ডাক্তার বা পরিদর্শনকারীদের প্রয়োজনীয় জীব নিরাপত্তা নিশ্চিত করে খামারে ঢুকাতে হবে।
১৮। কর্মচারীর জীব নিরাপত্তা জানা ও মানাঃ খামার কর্মীদের অব্যশই জৈব নিরাপত্তা সম্পর্কে জানতে হবে এবং তা মেনে চলার ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
১৯। খামারে কাজের জন্য আলাদা পোষাকঃ খামারের কাজের এবং বাহিরে বেড়ানোর জন্য অবশ্যই আলাদা পোষাক ব্যবহার করতে হবে।
২০। বণ্য প্রাণি প্রতিরোধঃ বণ্য প্রাণী বিভিন্ন রোগের বাহক এবং এরা অনেক সময়ই পশু পাখির ব্যাপক ক্ষতি করে থাকে। খামারে এদের প্রবেশ ঠেকাতে হবে।
২১। এক খামারে অন্য খামারের ব্যবহারের জিনিসপত্র আনা যাবেনা।
২২। নির্দিষ্ট দূরত্বে খামার স্থাপনঃ একটি খামার হতে আরেকটা খামারের স্ট্যান্ডার্ড দূরত্ব হচ্ছে ২০০মিটার বা ৬৫৬ ফুট। খামার স্থাপনের পূর্বে আশেপাশে ২০০মিটারের মধ্যে কোন খামারেআছে কিনা অবশ্যই বিষয়টি নিশ্চিত করে নিয়ে তারপর খামার স্থাপন করতে হবে।
২৩। নির্দিষ্ট দূরত্বে শেড স্থাপনঃ একটি শেড হতে আরেকটি শেডের দূরত্ব হবে শেডের প্রস্থের দুই গুণ দূরে। শেড করার পূর্বে এটা মাথায় রাখতে হবে।
২৪। একটা মাত্র প্রবেশদারঃ খামারে প্রবেশের জন্য অবশ্যই শুধুমাত্র একটা মাত্র গেট রাখতে হবে।
২৫। খামারের ময়লা আবর্জনা ৩০মিটার বা ৯৯ফুট দূরে গর্ত করে ফেলতে হবে।
২৬। পরিত্যক্ত খাবার ও লিটার সবসময়ই পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে।
২৭। শেডে নতুন বাচ্চা উঠানোর পূর্বে অবশ্যই ভালোকরে ফিউমিগেশন করতে হবে।
২৮। কোয়ারেনটাই করাঃ অন্য কোন খামার কিংবা বাজার হতে কোন ধরনের পশু বা পাখি সংগ্রহ করলে অবশ্যই নির্দিষ্ট সময় কোয়ারেনটাইন করে তারপর মুল শেডে ঢুকাতে হবে।
জীব নিরাপত্তা রোগের ঝুঁকি কমায়, চিকিৎসা, ঔষধ, ধকল এবং ডাক্তার খরচ কমিয়ে উৎপাদন বৃদ্ধিতে সহায়তা করে। সর্বোপরি খামারকে লাভজনক দিকে নিয়ে যেতে জৈব নিরাপত্তার বিকল্প নাই। সুতরাং আসুন আমরা কারনে অকারনে এন্টিবায়োটিকের ব্যবহার না করে খামারে Bio security জোড়দার করি। খামারকে লাভজনক করি।
Subscribe to:
Post Comments (Atom)
No comments:
Post a Comment