রাণীক্ষেত (Ranikhat)
রাণীক্ষেত রোগের লক্ষণঃ
ভেলোজেনিক ষ্ট্রেইন দ্বারা আক্রান্ত মুরগীর লিক্ষণ-
- হাঁচি, কাশি ও নাকমুখ হয়ে শ্লেমা নির্গমন।
- শ্বাসকষ্ট।
- ঝিমানো।
- নিস্তেজতা ও দুর্বলতাএবং সর্বশেষে মৃত্যু ঘটে থাকে।
- রোগের শেষের দিক স্নায়ুতন্ত্র আক্রান্ত হয় এবং নানা স্নায়ুবিক লক্ষণ প্রকাশ পায় যেমন- কাঁপানি, পা অবশ হওয়া ইত্যাদি দেখা যায়।
মেসোজেনিক ষ্ট্রেইন দ্বারা আক্রান্ত মুরগীর লক্ষণ-
শ্বাসতন্ত্রই আক্রান্ত হয় হবে তীব্রতা বা মুরগীর কষ্ট বা মৃত্যুহার তুলনামূলকভাবে কম হয়ে থাকে, এর লক্ষণ নিম্নরুপ-
- কাশি।
- ক্ষুধামন্দ, ডিম উৎপাদন হার হ্রাস।
- বাচ্চা মুরগীর এ ষ্ট্রেইন দ্বারা অধিকতর ক্ষতি হয়ে থাকে।
ল্যানটোজেনিক ষ্ট্রেইন দ্বারা আক্রান্ত মুরগীর লিক্ষণ-
- হাঁচি, কাশি ও গলায় ঘড় ঘড় আওয়াজ শোনা যায়।
- বাচ্চার মৃত্যুর হার কম হলেও বাচ্চার শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা সাময়িকভাবে হ্রাস পায়।
জেনারেল লক্ষণঃ
- হাঁচি, কাশি, শ্বাসকষ্ট, গলায় ঘড় ঘড় আওয়াজ এ রোগের প্রথম।
- শ্বাসযন্ত্র ও স্নায়ুতন্ত্র বিশেষভাবে আক্রান্ত হয়। শ্বাসতন্ত্র আক্রান্ত হওয়ায় শ্বাসকষ্ট হয় ফলে মুরগী গলা টান করে মুখ খুলে শ্বাস টানে।
- স্নায়ুতন্ত্র আক্রান্ত হওয়ায় পরবর্তী পর্যায়ে প্যারালাইসিস বা পক্ষাঘাত দেখা যায়
- সাদা চুনের মতো পাতলা পায়খানা করে।
- কখনো বা সবুজ বা রক্তের দানা মিশ্রিত পায়খানা হবে।
- ঘাড়, ডানা ও পা অবশ বা প্যারালাইসিস হয়।
- কোন কোন রোগাক্রান্ত মুরগী অস্থির অবস্থায় পিছনের দিকে ঢলে পড়ে বা চক্রাকারে ঘুরতে থেকে।
- খাবার দাবার বন্ধ করে আড়ালে গিয়ে মাথা একদিকে বাঁখিয়ে রাখে অথবা পিছন ফিরে ডানায় গুঁজে রাখে।
- ডিম উৎপাদন আকস্মিকভাবে হ্রাস পায় অথবা একেবারেই বন্ধ হয়ে যায়।
- তাছাড়া নরম বা খোসাবিহীন ডিম পাড়ে।
রাণীক্ষেত রোগ নির্ণয়ঃ
· রোগের লক্ষণ দেখে এরোগে সহজেই নির্ণয় অরা যায়। এছাড়া এ রোগের দ্রুত বিস্তার এবং ব্যাপক মৃত্যুহার ও ডিম পাড়া মুরগির ডিমে আকার অসমতল ও বিকৃত হয়।
· এছাড়া ময়না তদন্ত করে এ রোগ অতি সহজেই নির্ণয় করা যায়। ময়না তদন্তে মুরগির পোভেন্টিকুলাসে এ petechal hemorrhage (পোভেন্টিকুলাসে ছোট ছোট রক্তের দাগ) থাকে। এছাড়া বিভিন্ন লাল, হলুদ, কালো ও অন্ত্রনালী পচে যায় এবং রক্ত ক্ষরণ হয়। Intestine এ Plug তৈরী হয়। শ্বাসনালীতে রক্ত দেখা যেতে পারে অথবা শ্বাসনালী ফুলে যেতে পারে।
রাণীক্ষেত রোগের চিকিৎসাঃ
এ রোগের কোন চিকিৎসা নেই।
তবে,
1. প্রাতি দিন জীবাণুনাশক দ্বারা সম্পুর্ণ খামার ও খামারের সরমঞ্জামাদি জীবাণু মুক্ত করতে হবে।
2. ১ গ্রাম টিমসেন/পটাশ জীবাণু নাশক ২ লিটার পানিতে মিশিয়ে সুস্থ না হওয়া পর্যন্ত প্রতি দিন খাওয়াতে হবে।
3. ইঞ্জেকশন জেন্টামাইসিন ৫% ১মিলি ঔষধ ১৯ মিলি বিশুদ্ধ পানির সংগে মিশিয়ে আ মিলি করে অসুস্থ মুরগীর রানের মাংসে পর পর ৩ দিন প্রয়োগ করলে অনেক সময় পাওয়া যায়।
রাণীক্ষেত রোগ প্রতিরোধঃ
1. আক্রান্ত পাখি পৃথক করে চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে হবে।2. মৃত পাখি মাটিতে পুতে রাখতে হবে।
3. রোগক্রান্ত মুরগি কোন অবস্থায় হাট-বাজারে নেওয়া যাবে না।
4. বহিরাগতদের খামার ভিজিট করতে না দেওয়া।
5. সিডিওল মোতাবেক রাণীক্ষেত রোগের টিকা র রোগ প্রায় ৯০% প্রতিরোধ করা যায়।
No comments:
Post a Comment